ডেস্ক নিউজ:
দিন যত যাচ্ছে, চিকিৎসকরা ক্যান্সার হওয়ার নতুন নতুন কারণ খুঁজে বের করছেন। প্রতিটি মানুষেরই জীবনের কোনো না কোনো সময় ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সুখের কথা এই যে, অধিকাংশ ক্যান্সার-তা সে বংশগত কিংবা পরিবেশগত যে কারণেই হোক না কেন— প্রতিরোধ করা সম্ভব। জীবননাশক ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে চিকিৎসকরা সহজ উপায়ের কথা বলেছেন, যা মেনে চললে দোরগোড়া থেকেই ছুটে পালাবে ক্যান্সার-
ক্যান্সারবিরোধী খাবার খান : এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে ফলমূল ও সবজি। প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত ফলমূল ও সবজি রাখবেন। রান্নার ঠিক আগ মুহূর্তে এগুলো কেটে ধুয়ে ফেলুন। তবে খেয়াল রাখবেন, টুকরোগুলো যেন বেশি ছোট না হয়। টুকরো যত বড় করবেন, ভিটামিনও তত বেশি থাকবে। টুকরো ছোট হলে অক্সিজেনের সংস্পর্শে ভিটামিনগুলো নষ্ট হয়ে যায়। খাদ্যে ভিটামিন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এগুলো ক্যান্সারের বিরুদ্ধে দারুণভাবে যুদ্ধ করে। ফলমূল কিংবা সবজির আঁশ আপনার শরীর থেকে ক্যান্সারের উপাদান বিতাড়িত করে। এসব খাবার ৫০ শতাংশ ক্যান্সার ঝুঁকি কমায়।
কপিজাতীয় সবজি খান : বাফেলোতে অবস্থিত রোজওয়েল পার্ক ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের গবেষকরা ৪৮৯ জনের ওপর এক গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন, বংশগত ও পুষ্টিগত অবস্থা কিভাবে তাদের অন্ত্র ও পায়ুপথের ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। কিছু খাদ্য এ ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে কপিজাতীয় সবজি যেমন- ব্রুকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি ও শালগম।
সঠিকভাবে ব্যায়াম করুন : হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ৪৮ হাজার লোকের ওপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেছেন, তাদের অন্ত্রের ক্যান্সারের আশঙ্কা ৫০ শতাংশ কমে গেছে। ব্যায়াম কেবল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটায় না, ব্যায়ামের ফলে অন্ত্রে খাদ্য চলাচলের গতি বেড়ে যায় এবং এ কারণে ক্যান্সার উৎপাদনকারী বস্তুগুলো অন্ত্রে অবস্থান নেওয়ার সুযোগ পায় না।
টমেটোর চাটনি খান : হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ৪৮ হাজার পুরুষের ওপর এক গবেষণা চালিয়েছেন। দেখা গেছে, যারা নিয়মিত টমেটোর তৈরি খাবার খেয়েছেন তাদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি ২১ শতাংশ কমে গেছে। আর যারা দিনে দুই থেকে চারবার খেয়েছেন তাদের কমেছে ৩৪ শতাংশ।
খাদ্যে সয়াবিন যোগ করুন : সয়াবিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বটে তবে ঠিক কতটুকু কমায় তা জানা যায়নি। সয়াবিনে থাকে ‘ফাইটোইস্ট্রোজেন’ নামক উপাদান, যা প্রোস্টেট ও স্তন ক্যান্সারকে প্রতিহত করে। সয়াবিনের শক্তিশালী ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান হলো ‘জেনিসটেইন’। এটি নতুন টিউমারের পাশে কোনো রক্তনালি গঠন হতে দেয় না। এক গবেষণায় দেখা গেছে, জাপানের পুরুষরা বেশি করে সয়াবিন খাওয়ার কারণে প্রোস্টেট ক্যান্সারে কম ভুগে থাকেন। আপনি যখন রুটি তৈরি করবেন, তখন আটার মধ্যে সয়াবিন মিশিয়ে দেবেন। যেকোনো খাবার রান্নার সময় একটু সয়াবিন যোগ করুন।
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।